Request to Honourable City Dwellers

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এলাকায় বিট পুলিশিং কার্যক্রমের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন এবং বাড়ী/স্থাপনা/প্রতিষ্ঠান এর মালিক ও ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ পূর্বক ডাটাবেস প্রস্তুতকরণে নগরবাসীর প্রতি সহায়তার

আহবান

প্রিয় মহানগরবাসী, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এলাকায় বিট পুলিশিং কার্যক্রমের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন এবং বাড়ী/স্থাপনা/প্রতিষ্ঠান এর মালিক ও ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ পূর্বক ডাটাবেস প্রস্তুতকরণ কার্যক্রমে আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি।

পুলিশের সেবাকে জনগণের নিকট পৌঁছে দেয়া, পুলিশের সেবাকে অধিকতর গতিশীল ও কার্যকর এবং পুলিশের কার্যক্রমের সাথে জনগণের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন থানা এলাকায় কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থার পাশাপাশি বিট পুলিশিং কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। প্রতিটি থানা এলাকাতে ০৩ থেকে ০৯ টি বিট কার্যকরী আছে যার সর্বমোট সংখ্যা ২৮৭ টি। বিট পুলিশিং কার্যক্রমের ফলে পুলিশের প্রতিটি এলাকা, এলাকার অপরাধ প্রকৃতি এবং অপরাধী সম্পর্কে ধারণা বৃদ্ধি পাবে। এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বসবাসকারীদের কৌশলগত অবস্থান এবং এলাকাবাসী সম্পর্কে তথ্যভান্ডার সমৃদ্ধ হবে। এতে করে কোন অপরাধ সংঘটিত হলে সংশ্লিষ্ট অপরাধী সনাক্ত করা সহজতর হবে এবং অপরাধ দমনে এবং উদঘাটনে পুলিশের রেস্পন্স টাইম কমে আসবে। বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে পুলিশিং কার্যক্রম বেগবান হবে, জনগণের সাথে পুলিশের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পাবে এবং অপরাধ প্রতিরোধে জনগণের সহায়তার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়াও গণসচেতনতা বৃদ্ধি ও সামাজিক অপরাধ সমূহ হ্রাস পাবে।

বিট পুলিশিং এর অন্যতম কার্যক্রম হিসেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এলাকায় বাড়ীর মালিক ও ভাড়াটিয়া সম্পর্কে নির্দিষ্ট ফরমে পরিচিতিমূলক তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। কারণ বিভিন্ন অপরাধী ও জঙ্গী সংগঠনের সদস্যরা বাড়ীর মালিকের অজ্ঞাতে ভূয়া নাম ঠিকানা ও পেশা ব্যবহার করছে, কিংবা নাম ঠিকানা অপ্রকাশিত রেখে এবং কোন চুক্তি না করেই বাড়ী ভাড়া নিচ্ছে। এতে তারা নির্বিঘেœ তাদের অপরাধ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে নিরীহ নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টিসহ আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি করার অপচেষ্টা করছে। অপরাধ সংঘটন বা জঙ্গী কর্মকান্ডের তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশি অভিযানের পর দেখা যায় অপরাধী (ভাড়াটিয়া)দের সম্পর্কে কোন তথ্য বাড়ীর মালিক দিতে ব্যর্থ হন। ফলে অপরাধের রহস্য উদঘাটন এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা যেমন কষ্টসাধ্য হয়, তেমনি বাড়ীর মালিক অহেতুক আইনী জটিলতার সম্মুখীন হন। কারণ কারো ব্যক্তিগত অবহেলার পিছনে কোন অপরাধ সংগঠিত হলে আইনের চোখে তিনি অপরাধী হিসেবে গণ্য হবে। ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৪২ ধারা অনুসারে জনগণের কাছে অপরাধী গ্রেফতার ও শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সাহায্য চাইলে জনগণ কর্তৃক পুলিশকে সহায়তা করার আইনী বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাছাড়া ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রন) বিধিমালা, ২০০৬ অনুসারে ঢাকা মহানগর এলাকায় অপরাধী সনাক্তকরণ ও তা প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা এবং জনসাধারনের শান্তি বিঘœকারী যেকোন উদ্যোগ প্রতিহতকরণে ব্যবস্থা নেয়া কমিশনারের অন্যতম দায়িত্ব। কিন্তু মহানগরবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা ছাড়া ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় পুলিশিং কাজে সফলতা লাভ করা সম্ভব নয়।

সম্মানিত নগরবাসীর প্রতি আহবান

  • অপরাধ তথ্য প্রদানে এবং অপরাধ প্রতিরোধে পুলিশকে সহায়তা করার আইনি ব্যধ্যবাধকতার পাশাপাশি, পুলিশিং কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান একজন সুনাগরিকের সামাজিক দায়িত্বও বটে। পুলিশ কর্তৃক সরবরাহকৃত বাড়ী/প্রতিষ্ঠান/স্থাপনার মালিক ও ভাড়াটিয়া নিবন্ধন ফরম যথাযথভাবে পূরণ করে সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তা অথবা থানায় পৌঁছে দেয়ার জন্য অনুরোধ করা যচ্ছে।
  • কোন কারণে ফরম না পেয়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট থানায় যোগাযোগ করে নিরাপত্তার স্বার্থে ফরমটি সংগ্রহ করে পূরণ পূর্বক জমা দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
  • প্রতিটি ফরমের সাথে বাড়ী/প্রতিষ্ঠান/স্থাপনার মালিক ও ভাড়াটিয়ার জাতীয় পরিচয় পত্র (কিংবা অন্যকোন পরিচয় পত্র যেমন পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট ইত্যাদি) সংযুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি সকল ভাড়াটিয়ার এক কপি ছবি সংযুক্ত করারও অনুরোধ করা হচ্ছে ।
  • ভাড়াটিয়া চলে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে থানাকে অবহিত করা এবং নতুন ভাড়াটিয়া আসলে একই নিয়মে ফরম পূরণ করে সংশ্লিষ্ট বিট অথবা থানায় জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
  • বাড়ী/প্রতিষ্ঠান/স্থাপনার মালিক ও ভাড়াটিয়াগণ পরস্পরের চলা ফেরা, কার্যক্রম এবং আচরণ সম্পর্কে সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো। কোন ব্যত্যয় দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে আবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
  • বাড়ী/প্রতিষ্ঠান/স্থাপনার মালিক ভাড়াটিয়াদের পূরণকৃত ফরম সংগ্রহপূর্বক সংশ্লিষ্ট বিট অফিসার বা থানার অফিসার ইনচার্জ এর নিকট পৌঁছে দেয়া এবং তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

যাদি কোন বাড়ীওয়ালা তার ভাড়াটিয়া সম্পর্কে তথ্য দিতে ব্যর্থ হন বা ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন রাখেন এবং এর ফলে যদি কোন সন্ত্রাসী বা জঙ্গী কার্যক্রম সংঘটিত হয় কিংবা জননিরাপত্তা বিঘিœত হওয়ার মত কোন ঘটনা ঘটে তা হলে সে বাড়ীওয়ালা বা প্রতিষ্ঠানের মালিক তার কৃতকর্মের জন্য ফৌজদারি অপরাধের দায় এড়াতে পারবে না। কেননা অপরাধ সম্পর্কে তথ্য না দেয়া, কোন অপরাধ বা অপরাধীকে আশ্রয়, প্রশ্রয় দেয়া প্রচলিত আইনে অপরাধ হিসেবে গন্য।

মালিক ও ভাড়াটিয়া সম্পর্কে সংগৃহীত তথ্য সংরক্ষণে গোপনীয়তা রক্ষা করা হবে এবং তথ্য উপাত্ত অপরাধ প্রতিরোধ এবং প্রতিকারে ব্যবহার করা হবে। ব্যক্তি সনাক্তকরণ এবং জননিরাপত্তা বিধানে তথ্যাদি ব্যবহারই এ কাজের মূল উদ্দেশ্য। অন্য কোন সংস্থা বা বিভাগের সাথে এ তথ্যাদি শেয়ার করার সুযোগ নেই। সংগৃহীত তথ্য যাতে অন্য কেউ পেতে না পারে এবং এর অপব্যবহার বা অপ্রয়োগ করতে না পারে সে জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ নিবিড় তদারকির মাধ্যমে নির্দেশনা বাস্তবায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। কোন তথ্য যৌক্তিক কারণে উপস্থাপন না করতে চাইলে তা বিশেষ বিবেচনায় রাখার জন্য অফিসার ইনচার্জদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে যে কোন ধরণের হয়রানি পরিহার করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারপরেও কোন ব্যবস্থা বা পুলিশ কর্মকর্তাদের কোন আচরণ সম্পর্কে কোন মতামত বা অভিযোগ থাকলে থানার অফিসার ইনচার্জসহ ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পুলিশ এবং জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে একটি টেকসই নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে নিরাপদ ঢাকা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার আমরা পূরণ করতে পারব। পুলিশিই জনতা, জনতাই পুলিশ এ মন্ত্রে উদ্ধুদ্ধ হয়ে কমিউনিটি ভিত্তিক পুলিশিং ব্যবস্থা প্রবর্তন, পুলিশ-জনতার সম্মিলিত উদ্যোগে অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকারের মাধ্যমে সমাজ থেকে পুলিশভীতি ও অপরাধভীতি দূর করাসহ প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তাবোধ (Sense of Security) বৃদ্ধি করাই আমাদের লক্ষ্য।

Comments are closed.